google add

Friday, October 31, 2014

ঈদে খরচ পাঠাব চিন্তা কোরোনা। " সে খরচ পাঠানো আর হয়নি ছেলের্।

বীর শ্রেষ্ট হামিদুর রহমান
বাবা মায়ের আদরের সন্তান ছিল হামিদ। তবে সোনার চামচ মুখে নিয়া জন্মাইছে এইটা বলা যাবেনা। অভাবের সংসারে পড়ালেখাও খুব বেশিদুর করতে পারেনি।

বাপের সাথে যোগালীর কাজ করত। সত্তরের সেই আগুনঝরা দিনগুলোতে হামিদ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। পোষ্টিং পড়ে চট্টগ্রামের ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ২৫ শে মার্চ অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হলে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে যুদ্ধে নামে মৃত্যুর আগে শেষবার মায়ের সাথে দেখা করতে গেলে ফেরার সময় হামিদ কথা দেয়

" ঈদে খরচ পাঠাব চিন্তা কোরোনা। " সে খরচ পাঠানো আর হয়নি ছেলের্।

অক্টোবরের আঠাস তারিখ। শ্রীমঙ্গল চা বাগান। চারদিকে সুনসান নীরবতা শুধু জেগে আছে মুক্তিবাহিনীর একটা ইউনিট। জেড ফোর্সের অধিনে তারা। ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কাইয়ুম। ধলই সিমান্তে পাকি ক্যাম্প আজ রাতেই ধ্বংস করতে হবে। চুপিসারে কাজ সারতে হবে। কিন্তু হিসাবে মারাত্মক গোলমাল ছিল। তিন প্লাটুন সৈন্য মুভ করতেই শুরু হয়ে গেল পাকিদের অটোমেটিক মেশিনগানের গোলাবর্ষণ।


সামনে মাইন পাতা ছিল। মাইন বিষ্ফোরণে উড়ে গেল মুক্তিবাহিনীর অগ্রসরমান দলটি। এমনকি গোলন্দাজ বাহিনী গোলাবর্ষন করেও পাকিদের দমাতে পারছিল না। পরাজয় আসন্ন। পাক ঘাটির কাছে এসেও তাঁরা শুধু একটি কারণে ঠিক সুবিধা করতে পারছেন না। বিওপির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের একটি এলএমজিই এর প্রধান কারণ।

এটি থেকে মুহুর্মুহু ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসছে বুলেট। এদিকে ঘন গাছগাছালির কারণে মুক্তিযোদ্ধারাও সঠিকভাবে তাঁদের মেশিনগান চালাতে পারছে না। সামনে এগোতে হলে অবশ্যই সেই এলএমজিটা থামিয়ে দিতে হবে। লে. কাইয়ুম সিদ্ধান্ত নিলেন, যেভাবেই হোক ওই এলএমজিটা থামাতেই হবে। তিনি সহযোদ্ধা সিপাহী হামিদুর রহমানকে ডেকে বললেন, ', 'ওই এলএমজিটা থামাতেই হবে।' -ইয়েস স্যার। -এ কাজটা তোমাকেই করতে হবে। -জি আচ্ছা স্যার। -পারতেই হবে কিন্তু। - জীবনবাজি, স্যার। সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুত হয়ে গেলেন সিপাহী হামিদুর রহমান। টগবগ করে উঠল শরীরের রক্ত। আঠারো বছরের এক উদ্দীপ্ত তরুণ শপথ করলেন জীবনবাজি রেখে। বুকে হেঁটে হেঁটে এগিয়ে যেতে লাগলেন এলএমজিটার দিকে। বুকের নিচে কঠিন মাটি, ডাইনে-বায়ে-উপরে সমানে চলছে গুলি।

মাটির নিচ থেকে যে কোনো সময় ফুটতে পারে মাইন। উভয় পক্ষের আগ্নেয়াস্ত্রগুলো গর্জে উঠছে মুহুর্মুহু। এসব উপেক্ষা করে মৃত্যুকে পরোয়া না করে সিপাহী হামিদুর রহমান এসে পড়লেন একেবারে এলএমজিটার কাছাকাছি। দেখলেন, এলএমজিটার পেছনেই দুজন পাকিস্তানী সেনা। একা দুজনকে কাবু করতে পারবেন তো!এক মুহূর্ত দ্বিধা করলেন না তিনি। এবার তিনি ঝাঁপিয়ে পড়লেন এলএমজি পোস্টের ওপর। এলএমজি চালনায় নিয়োজিত দুই পাকিস্তানী সেনার সঙ্গে শুরু হলো ধ্বস্তাধস্তি। বুটে গুজে রাখা আর্মি নাইফ টা সর্বশক্তি দিয়ে ঢুকিয়ে দিলেন এক পাকির বুকে। সাথে সাথে গ্রেনেডের পিনটা খুলে সে জায়গায় রেখেই ঝাপ দিলেন হামিদুর্। ধ্রিম। থেমে গেল এলএমজিটা। মুক্তিবাহিনী এসে বীর হামিদুরের মৃতদেহ খুজে পায়। সে তার কথা রেখেছে।

এই হল আঠার বছরের তরুণ হামিদুরের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান হওয়ার গল্প। এইত একাত্তরের ২৮ শে অক্টোবর রাতে হামিদুর রহমান দেশের জন্য প্রাণ দেয়। তিনদিন আগে চলে গেল তার শাহাদাত বার্ষিকী ..কে মনে রেখেছে? অবশ্য মনে রাখার সময় কই। আমরা ব্যাস্ত ইতিহাস ভুলতে পাতিহাস জানতে। জাতি ব্যাস্ত রাজাকার গোলামের গায়েবানা জানাযায় শরিক হতে। গোলাম আযম সাহেব ..কি সম্মান। বাপরেও এত সম্মান দেয়না কেউ। আর হামিদুর রহমানের লাশ? ৩৬ বছর কোথাকার কোন এক পারিবারিক কবরস্থানে পইড়া ছিল। আমরা খবরও নেইনি। আমরা ব্যাস্ত ভীনদেশী সুপারহিরোদের নিয়ে।

ক্যাপ্টেন আমেরিকা ,হইত কালের সোলজার্। জানিনা আমাদের ভার্চুয়াল সুপারহিরো লাগেনা,আমাদের আছে হামিদুর রহমানদের মত রিয়েল সুপারহিরো,ক্যাপ্টেন বাংলাদেশ। আমাদের রবার্ট ব্রুসের মত সাতবারে যাইয়া জিততে হয়নারে পাগলা। আমরা হইলাম তারছিড়া জাতি ,আমরা শত্রুর হাত থেইকা এলএম জি কাইড়া নিয়া শত্রুর বুকে গুলি করি


লিখা - ওয়ারিশ আজাদ নাফি

No comments:

Post a Comment